হিম শীতল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় কনকনে শীতের ঠান্ডায় কাঁপছে উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের খানসামা। দিনের বেলায় একটু রোদ থাকলেও বিকেল হওয়ার সাথে সাথে হিমেল হাওয়ায় বদলে যায় দৃশ্যপট। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষ। রেহাই পাচ্ছে না পশু-পাখিরাও।গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীত কষ্টে ভুগছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

উপজেলা জুড়ে গতবারের চেয়ে এবার শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। সকালে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। শীতের সময় সকাল ও বিকেলে ঘন কুয়াশার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশার কারনে চলাচলে ঘটছে বিঘ্নতা। সন্ধ্যার পরে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে দেখা মিলছে শীতের পোশাক পরিহিত মানুষদের। কোথাও দেখা যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ শীতকালীন গরম পোশাকের দোকান। শীতের আগমনে শীতকালীন পিঠাপুলির দোকান ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিছুটা উষ্ণতার আসায় চায়ের দোকানে ভিড় করছে মধ্যে বয়স্ক।

প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় শীতের পোশাকের আকুতি জানান কয়েকজন বয়োবৃদ্ধারা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বয়স্ক ব্যক্তিদের সকালে খর দিয়ে; আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। একসাথে বসে গল্প আড্ডায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে অনেকে।

চাঁদর মুরি দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে আব্দুল ছাদেক বলেন, “বাবারে যে এনা চলাচল করতে পাচ্ছুনু শীত আসাতে তাও বন্ধ হয়ে গেছে। শীতের কারণে কোথাও যাবার পাচ্ছোনা। সকালে আর বিকালে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করো।  রাইতোত অনেক গুলো ক্যাথা গায়ে দেও তারপরও কেন জানি হাঁটু কাঁপা-কাঁপি করে।

চায়ের চুমুক দিতে দিতে সবুজ বলেন, মামুরে গ্রামে যে ঠান্ডা। ঢাকায় থাকাকালীন এত ঠান্ডা পাই নাই। রাতে এখন যে হারে শীত পরে, তাতে মনে হচ্ছে এবার শীতে সাধারণ মানুষের হাটু কাঁপবে।

গোবিন্দপুর এলাকার আমু বলেন, আমাদের এলাকায় যে ঠান্ডা তাই সন্ধ্যা হলেই বাড়ি থেকে সুয়েটার পরে বের হই। সন্ধ্যাবেলা থেকেই যে ঠান্ডা লাগে। সেই সাথে কুয়াশা আর বাতাস তো আছেই।

এ বিষয়ে জুথি আক্তার বলেন, আমাদের এলাকায় প্রচন্ড শীত, আগে এ রকম ঠান্ডা অনুভব করিনি। সেই সঙ্গে ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কুয়াশা পড়ছে প্রচুর।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৫ ভাগ। চলতি সপ্তাহে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে এই জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।